
যেকোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় র্যাগিংয়ের মতো জঘন্য অপরাধ না করার শর্তে শিক্ষার্থী ও তার অভিভাবকের স্বাক্ষর নিতে হবে এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় করা এক আবেদনের শুনানি শেষে বুধবার (১ মার্চ) দেওয়া রায়ের পর্যবেক্ষণে এ কথা বলেন হাইকোর্ট।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি সম্প্রতি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্বাভাবিক কিছু ঘটনা ঘটছে। রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে এসব ঘটনা ঘটছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফৌজদারি অপরাধ করা হচ্ছে।
এ সময় বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলার রায়ের ৬টি পর্যবেক্ষণও স্মরণ করেন আদালত।
এ দিন রায় পর্যবেক্ষণে আদালত বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিয়ের ঘটনা প্রতিরোধে প্রভোস্ট-হাউজ টিউটরদের রাতের বেলার বেশিরভাগ সময় হল তদারকির নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে আবাসিক শিক্ষকদেরও বেশিরভাগ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন।
গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি ইবির দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ওই ছাত্রীকে রাতভর র্যাগিং ছাড়াও শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে তার ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ উঠে। এতে শাখা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ছাত্রলীগ কর্মী তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, ইসরাত জাহান মিমি ও হালিমা খাতুন উর্মিসহ কয়েকজন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর।
ওই ঘটনায় সেই ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়াও ঘটনাটিতে পৃথকভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল ও শাখা ছাত্রলীগ। পাশাপাশি হাইকোর্টের নির্দেশেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। পরবর্তীকালে তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেলে সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, তাবাসসুম, হালিমা খাতুন উর্মি, ইশরাত জাহান মিমি ও মায়োবিয়ার সিট বাতিল করা হয়। সেই সঙ্গে তাদের স্থায়ীভাবে আবাসিকতা বাতিল করা হয়।
এদিকে, বুধবার এ বিষয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে দেওয়া রায়ে আদালত অভিযুক্ত ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে প্রভোস্টকে হল থেকে অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও রায়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে আগামী তিন দিনের মধ্যে যে কোনো হলে সিট বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে পছন্দমতো যে কোনো সিট দিতে ও ক্লাসে ফিরতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: