
পবিত্র মাহে রমাদান আল্লাহ তায়ালার নিকট উত্তম ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত।এতে করে আত্মার পরিশুদ্ধি তাকওয়া আল্লাহর সাথে বান্দার সান্নিধ্যের মাধ্যমে ঐক্যান্তিক সু-সম্পর্ক স্থাপনের মাস।রমজান কুরআন নাযিল ও ইসলামের বিপ্লবী বিজয়ের মাস। জিহাদসহ মুসলিম মিল্লাতের সুসংবাদের মাস। এদিকে ১৭-ই রামাদান সংগঠিত বদর যুদ্ধ ছিল ইসলাম ও কুফরিদের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষ। এই যুদ্ধে মুসলিমবাহিনীর প্রতীকি চিহ্ন ছিল আহাদ আহাদ।
মানবতার মহান শিক্ষক মহান সেনানায়ক মহানবী রাসূল (সাঃ) ও তার বিপ্লবী অনুসারীরা এ মহান মাসেই লড়াই করেছিলেন। অন্যায় অসত্য জুলুম শোষণ ও বাতিলের বিরুদ্ধে রমাদান মাসেই এ সংগ্রাম। একদিকে নতুন যুগের আবির্ভাব এছাড়াও অন্ধকার যুগের অবসান,অন্যায় অত্যাচার জুলুম নির্যাতন ও কর্তৃত্ববাদের অবসান ঘটিয়ে সত্যের বিজয় সূচিত হয়। ন্যায় সত্য শাসিত পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান প্রতিষ্ঠার মহাসংবাদ ও মুসলমানদের জন্য এই রমাদান মাসেই এ বিজয় সম্ভব হয়েছিল। রমাদান দিন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিবেদিত প্রাণ মর্দে মুজাহিদের জন্য বিজয়ের মাস। মুসলমানদের মুক্তি ও বিপ্লবী বিজয়ের প্রতিক।
১৭-ই রমাদান শুক্রবার সকালে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। তৎকালীন বদর যুদ্ধে কাফেরদের অগ্রাভিয়ান সংবাদে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অটুট মনোবলের অধিকারী। তিনি ৩১৩ জন বীর মুজাহিদের নিয়ে মদিনার প্রান্তে ৮০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিম অবস্থিত বদর নামক উপত্যকার দিকে রওনা হন। মুসলমানদের বস্তুত উপায় উপকরণ খুবই সীমিত। মাত্র ৭৭ টি উট ৩টি ঘোড়া ও ৬০টি লৌহবর্ম সহ কয়েকটি তরবারি মাত্র। দাঈ মুসয়াব ইবন উমায়ের (রাঃ) মুসলমানদের শ্বেতবর্ণের পতাকা বহন করে। ডান বাহুর সেনাপতি জুবায়ের ইবনুল আউয়াল। বাম বাহুর মিসকাত ইবন আসওয়াদ (রাঃ) সেনাপতি নিযুক্ত হয়। এদিকে পশ্চাৎভাগের কায়েস বিন আবু মাসআহ। মুজাহিদের কালো রঙের পতাকার বাহক আলী (রাঃ) ও আনসারদের সাদ ইবনুল মুয়াজ।
প্রধান সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেন স্বয়ং মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি যুদ্ধ কৌশল অনুযায়ী সেনাদল কে বিন্যস্ত করেন। এদিকে প্রতিপক্ষ কাফির বাহিনীতে ছিল ১০০০ সৈন্য ৭০০ উষ্ট্ররোহী ১০০ পদাতিক এবং ২০০ অশ্বারোহী তাদের সকল সৈন্যরা নানা অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত ছিল। তাছাড়া ৬০০ জন লৌহবর্মধারী সহ বাদ্যযন্ত্রের গায়িকাবাদীদল। মুসরিক বাহিনীর পতাকা বাহি দুষ্টমতি নয়ন বিন হারিস। তৎকালীন যুগের নিয়ম অনুযায়ী মুশরিক পক্ষ মুসলিম পক্ষের বীরযোদ্ধাদের দ্বৈতযুদ্ধের আহ্বান করে। পরে কাফেরদের একই পরিবারের তিনজন অশ্বারোহী বীর উদবা সাইবা ও অলীদ এগিয়ে এলো,জবাবে মুসলিম পক্ষ হতে কিশোর দুই ভাই মুয়াজ ও আফরা সহ তিনজন তরুণ বীরদর্পে এগিয়ে গেলেন,মুশরিক পক্ষ বলে হে মোহাম্মদ তোমার স্ব-গত্রদের পাঠাও।মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন হে উবায়দা হে হামজা হে আলী তোমরা যাও হামজা তার প্রতিপক্ষ রাবিয়াহ আলী তার প্রতিপক্ষ ওয়ালিদকে নিমিষে হত্যা করে পরাজিত করে। ঐদিকে ওবায়দা ইবনুল হারিস উতবাহ কে কতল করে ওবায়দাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। প্রথম আঘাতেই তিন বীর যোদ্ধা ও গোত্রনেতাদের হারিয়ে মুশরিক পক্ষ মরিয়া হয় যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় মুসলিম ও মুশরিকদের মাঝে যুদ্ধ ক্ষেত্র। মুসলমানদের প্রচন্ড আক্রমণের মুখে খোদাদ্রোহীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পলায়ন করেন।
মুজাহিদদের হাতে মুশরিক নিহত হয় ৭০ জন বন্দী হয় ৭০ জন এদিকে মুসলমানদের মধ্যে ৮ জন আনসার ও ৬ জন মহাজীর মিলে মাত্র ১৪ জন শহীদ হন।আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহে রহমত বরকত নাজাতের মাসে অনুষ্ঠিত এ যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় লাভ হয়।রমাদান মাসে অনুষ্ঠিত ১৭-ই রমাদান অনুষ্ঠিত এ যুদ্ধ ছিল হক ও বাতিলের পার্থক্যকারী।
এ যুদ্ধের দিনটিকে পবিত্র কুরআনে সূরা আনফালের ৪১নং আয়াতে ইয়ামুল খুরকান বলা হয়েছে। বদরের যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাস একটি যুগান্তকারী গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এ যুদ্ধ মুসলমানদের জন্য প্রথম বড় ধরনের যুদ্ধ হলেও শেষ যুদ্ধ ছিল না।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: