চাঁপাইনবাবগঞ্জ | মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ info@mohanonda24.com +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩
জুমাকেন্দ্রিক প্রত্যেক আমল মুমিনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জুমার দিনের কিছু আদব বা শিষ্টাচারের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে হাদিসে।

জুমার দিন অফুরন্ত সওয়াব ও ক্ষমা লাভের আমল

হ.আ/ স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশিত: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৫:২৭

হ.আ/ স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৫:২৭

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (জুমআর নামাযের সময় ধারনকৃত ছবি)

জুমাবার মুসলমানদের কাছে একটি কাঙ্ক্ষিত দিন। এই দিনকে সাপ্তাহিক ঈদ বলা হয়েছে হাদিসে। জুমাকেন্দ্রিক প্রত্যেক আমল মুমিনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জুমার দিনের কিছু আদব বা শিষ্টাচারের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে হাদিসে। যেমন পুত-পবিত্র হওয়া, আগেভাগে মসজিদে আসা, মসজিদে বসার ক্ষেত্রে মুসল্লিদের টপকে সামনে না আগানো, অনর্থক কথা না বলা, খুতবা শোনা ইত্যাদি জুমার দিনের বিশেষ আদব। এসব আদব রক্ষাকারীদের জন্য রয়েছে বিশেষ ঘোষণা। জুমার দিন যাদের ক্ষমা করা হয় এবং অফুরন্ত সওয়াব দেওয়া হয় তাদের মধ্যে হাদিস অনুযায়ী এসব গুণ থাকবে।

সামনের কাতারে বসার সওয়াব -
সামনের কাতারে বসার সওয়াব অনেক বেশি। সেজন্য মসজিদে তাড়াতাড়ি আসতেও বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে হাদিসে। জুমার দিন মসজিদে আগেভাগে আসার এবং ইমামের কাছাকাছি বসার অনেক ফজিলত রয়েছে। নবী (স.) বলেছেন, ‘জুমার দিন ফেরেশতারা মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে প্রথম থেকে পর্যায়ক্রমে আগন্তুকদের নাম লিখতে থাকে। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি উট সদকা করে। তারপর যে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি গাভী সদকা করে। তারপর আগমনকারী মুরগি সদকাকারীর মতো। তারপর আগমনকারী একটি ডিম সদকাকারীর মতো। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে বের হন, তখন ফেরেশতারা তাদের দফতর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনতে থাকেন।’ (বুখারি: ৮৮২)

প্রথম কাতারের সওয়াব সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যদি লোকেরা জানত যে আজান ও প্রথম কাতারে সালাত আদায়ে কী নেকি আছে, তাহলে তারা পরস্পর প্রতিযোগিতা করত। অনুরূপভাবে যদি তারা জানত এশা ও ফজরের সালাতে কী নেকি রয়েছে, তবে তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও ওই দুই সালাতে আসত।’ (বুখারি: ৬১৫)

জুমার দিনে ১১টি আমল-
আউস ইবনে আউস (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন উত্তমরূপে গোসল করবে। এরপর ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর দুটি খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং (খুতবার সময়) কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে একবছর নফল রোজা ও একবছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে।’ (আবু দাউদ: ৩৪৫)

জুমার দিন যাদেরকে বিশেষভাবে ক্ষমা করা হয়, তাদের ব্যাপারে নবীজি (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করবেন।’ (সহিহ বুখারি: ৮৮৩)

জুমার খুতবা শোনা শুধু সওয়াবের কাজ নয়, ওয়াজিবও। তাই খুতবার সময় কোনো কথা বলা যাবে না। এমনকি কাউকে চুপ থাকতে বলাও নিষেধ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘জুমার দিন যখন তোমার পাশের মুসল্লিকে চুপ থাকো বলবে, অথচ ইমাম খুতবা দিচ্ছেন, তা হলে তুমি একটি অনর্থক কথা বললে।’ (বুখারি: ৯৩৪, মুসলিম: ৮৫১)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমার দিনের প্রতিটি আদবের প্রতি সচেতন হওয়ার এবং জুমার দিনের পরিপূর্ণ ফজিলত অর্জনে সুন্নাহ সমর্থিত আমলগুলো যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: